কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি (পাঠ ১)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান শক্তির ব্যবহার | - | NCTB BOOK
101
101

আমরা প্রথমে নিচের চিত্রগুলোর দিকে লক্ষ করি।

উপরের চিত্রগুলো দেখে কী মনে হচ্ছে? প্রথম ছবিতে যে একজন শিক্ষার্থী একটি দেয়ালে ধাক্কা দিচ্ছে। আসলে সে কি কোনো কাজ করছে? দ্বিতীয় ছবিতে যে ফুটবল খেলছে, সে কি কোনো কাজ করছে? আর তৃতীয় ছবিতে যে মাথায় বোঝা নিয়ে দাঁড়িয়ে সে কি কোনো কাজ করছে? সাধারণ অর্থে আমাদের কাছে উপরের প্রত্যেকটি উদাহরণকেই কাজ করা মনে হচ্ছে। কিন্তু বিজ্ঞানের ভাষায় কাজের একটি সুনির্দিষ্ট অর্থ আছে। সহজ কথায়, কাজ তখনই হবে যখন কোনো বস্তুর উপর বল প্রয়োগে তার অবস্থানের পরিবর্তন হবে। তাহলে উপরের উদাহরণ থেকে দেখা যায়, যে শিক্ষার্থী দেয়ালে ধাক্কা দিচ্ছে তার কোনো অবস্থান পরিবর্তন হচ্ছে না বা যে মাথায় বোঝা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তারও কোনো অবস্থানের পরিবর্তন হচ্ছে না। ফলে বিজ্ঞানের ভাষায় এই দুই ক্ষেত্রে নিয়ে কাজ সংঘটিত হচ্ছে না। এখানে যে ফুটবল খেলছে তার এবং ফুটবলেরও অবস্থান পরিবর্তন হচ্ছে; ফলে সে কাজ করছে। বিজ্ঞানের ভাষায় আমরা বলতে পারি কোনো বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে বস্তুটিকে বলের দিকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরানো হলে কাজ সম্পন্ন হয়। কাজের সাথে দুটি বিষয় সম্পর্কযুক্ত, একটি হলো বল এবং অপরটি হল বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তন। বিজ্ঞানের ভাষায় কাজ হলো বল ও বস্তু কর্তৃক বলের দিকে অতিক্রান্ত দূরত্বের গুণফল।

একজন রিকশাচালককে রিকশা চালিয়ে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যেতে কাজ করতে হয়। ধরা যাক, একই দূরত্ব যেতে একজন রিকশাচালকের ১০ মিনিট লেগেছে, আবার অন্যজনের লেগেছে ১৫ মিনিট। এখানে দুইজনের মধ্যে কাজ করার হার বেশি কার? তাড়াতাড়ি কাজ করার সাথে 'ক্ষমতা' ব্যাপারটি জড়িত। কোনো কাজ করার হারকে ক্ষমতা বলে। কোনো রিকশাচালক কোন জায়গায় কম সময়ে গেলে তিনি বেশি ক্ষমতা ব্যবহার করেন। অর্থাৎ আমরা ক্ষমতা পাই মোট কাজকে মোট সময় দিয়ে ভাগ করে।

কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট আরেকটি ব্যাপার দেখা যাক। দুজন শিক্ষার্থী সিদ্ধান্ত নিল যে তারা স্কুলের খেলার মাঠটিকে মোট পাঁচবার প্রদক্ষিণ করবে। শুরু করার কিছুক্ষণ পর দেখা গেল একজন দুবার প্রদক্ষিণ করে বসে পড়ল, আরেকজন পাঁচবারই প্রদক্ষিণ করল। এখানে আমরা কাজ করার সামর্থ্যকে বিবেচনা করব। এদের মধ্যে যে দুবার প্রদক্ষিণ করার পর বসে পড়ল, সে কাজ করার সামর্থ্য ফুরিয়ে ফেলল। আর যে পাঁচবারই প্রদক্ষিণ করল, তার কাজ করার সামর্থ্য বেশি। বিজ্ঞানের ভাষায় কাজ করার এই সামর্থ্যই হলো শক্তি। এখানে দেখা যাচ্ছে যে কাজের সাথে শক্তি সরাসরি সম্পর্কযুক্ত।

শক্তি ও কাজ মূলত ভিন্ন কিছু নয়। কাজ করার জন্যই প্রয়োজন হয় শক্তির। যার যত বেশি শক্তি সে তত বেশি কাজ করতে পারে। এই কাজ এর পরিমাণ দিয়েই শক্তিকে পরিমাপ করা হয়। কাজের এককই হলো শক্তির একক। শক্তির একক হলো জুল (Joule)।

common.content_added_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion